1. admin@voiceofsreemangal.com : admin :
  2. suzannamichell@solstris.com : coralbarreiro23 :
  3. cecilewiley@solstris.com : dominiquecrump :
  4. earnestinechauncey@solstris.com : ermamorwood295 :
  5. jadajaime@solstris.com : haiguenther :
  6. lateshacandida@solstris.com : jeroldmccorkinda :
শ্রীমঙ্গল ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শ্রীমঙ্গলে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে র‍্যালি ও আলোচনা সভা ৮ দফা দাবিতে শমশেরনগরে রেলপথ অবরোধের সমর্থনে মানববন্ধন টিকিটবিহীন যাত্রী ও কালোবাজারি রোধে রেলওয়ের অভিযান ৩০ অক্টোবর থেকে ‘মৌলভীবাজার হাফ ম্যারাথন ২০২৬’-এর রেজিস্ট্রেশন শুরু মৌলভীবাজারে যুব মজলিসের শাখা দায়িত্বশীল সভা অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গল থেকে অপহৃত কিশোরী সিলেট থেকে উদ্ধার, গ্রেফতার-২ শ্রীমঙ্গলে গ্রাম পুলিশের ৫ম বার্ষিকী মহা সম্মেলন অনুষ্ঠিত শনিবার মৌলভীবাজারের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না মানব সম্পদ বিনির্মাণে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা কুলাউড়ায় ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ বিড়িসহ ১৪ আসামি গ্রেফতার
বিজ্ঞপ্তি :
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ভয়েস অব শ্রীমঙ্গল’ এ আপনাকে স্বাগতম। দেশব্যাপী জেলা, উপজেলা ও ক্যাম্পাস (মাদরাসা-কলেজ) প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন- ০১৬০১-৬০৮৬৮৮।

শহীদ আরমান দিবস, কী ঘটেছিল ৩১ বছর আগের এই দিনে

সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আজ শহীদ আরমান দিবস। ঠিক ৩১ বছর আগের এই দিনে (৩০ জুন) কিশোরগঞ্জে নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন স্কুলপড়ুয়া তরুণ আরমান। সেই সময় ঘটনাটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আজও শহীদ আরমানকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে দেশবাসী। এদেশে যতদিন ইসলাম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন শহীদ আরমান তাদের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ৩০ জুন ছিল বৃহস্পতিবার। কুখ্যাত নারীবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী লেখিকা তাসলিমা নাসরিনবিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। তৌহিদি জনতা সেদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেয়। পালিত হয় নজিরবিহীন হরতাল।

সারাদেশের মতো আলেম-উলামা অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জেও সেদিন কড়া হরতাল পালিত হয়। শহরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তৌহিদি জনতা। তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় বিএনপি। অন্যান্য সরকারের মতো যথারীতি তৌহিদি জনতাকে দমানোর চেষ্টা করে পেটোয়া বাহিনী পুলিশ। দুপুরের পরপর শহরের গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় মিছিলে গুলি করে পুলিশ। সেই গুলিতে আরমান লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। তার তাজা খুনে রঞ্জিত হয় কিশোরগঞ্জের রাজপথ।

শহীদ আরমানের বাসা ছিল শহরের পুরান থানা এলাকায়। শহীদি মসজিদের পাশেই। তিনি শহরের আজিম উদ্দিন সরকারি হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন। তবে তার বেশির ভাগ বন্ধুবান্ধব ছিল জামিয়া ইমদাদিয়ার। তিনি নিয়মিত নামাজ পড়তেন শহীদি মসজিদে। সেই বয়সেই ইসলামী ছাত্র মজলিসের সঙ্গে জড়িয়ে যান। মূলত সেখান থেকেই তার মধ্যে শহীদ হওয়ার তামান্না জাগে।

সেই সময়ে শহীদ আরমানকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন তারা বলেন, আরমান শহীদ হওয়ার আগের দিন জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিম মাওলানা সালাহুদ্দিন সাহেবের কাছে জানতে চান, নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে মারা গেলে কি শহীদ হবে? মাওলানা সালাহুদ্দিন জবাব দেন- হঁ্যা হবে। এই কথাটি কিশোর আরমানের মনে দাগ কাটে। সেদিন তার মা বারবার মান করছিলেন বের হতে। কিন্তু কোনো বারণই তাকে রুখতে পারেনি। তিনি মিছিলে যান এবং পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

জামিয়া ইমদাদিয়ার ফারেগ মাওলানা গাজী আশরাফ আলী সেদিন শহীদ আরমানের পাশেই ছিলেন। তিনিও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেখান থেকেই গাজী উপাধি যুক্ত হয় তার সঙ্গে। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন আমরা মিছিল করে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ গৌরাঙ্গবাজারের দিকে পুলিশের লাঠিচার্জের কথা শুনতে পেলাম। আমি আর আরমান প্রায় সমবয়সী। আরমান বলল, ইসমাঈল হুজুরকে পুলিশ মারধর করছে। চল, দেইখা আসি। আমরা যখন ব্যাপারটা দেখতে জামিয়া ইমদাদিয়া পেরিয়ে জনতা ব্যাংকের সামনে এলাম, ঠিক তখনই গোলাগুলি শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরমান গুলিবিদ্ধ হলো, আমিও পড়ে গেলাম মাটিতে। তারপর আর কিছুই জানি না। সুস্থ হওয়ার পর জানতে পারি আরমান আর নেই। আল্লাহর দয়ায় আমি এখনো বেঁচে আছি।’

পরদিন শহীদ আরমানের লাশ নিয়ে শহরে মিছিল বের হয়। ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল জানাজা। সেই জানায় কিশোরগঞ্জের আলেম-উলামা ছাড়াও ঢাকা থেকে অনেক আলেম-উলামা শরিক হন। জনতার চাপে তৎকালীন বিএনপি সরকার অভিযুক্ত পুলিশকে চাকরিচ্যুত করে। এই হত্যার বিচারের আশ্বাসও দেওয়া হয়। তবে সেই বিচার আর আলোর মুখ দেখেনি। শহীদ মসজিদের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় শহীদ আরমানকে। দীনের জন্য, কুরআনের সম্মান রক্ষায় শহীদদের তালিকায় আজও উজ্জ্বল হয়ে আছেন শহীদ আরমান।

মুআমু/

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :
  • আপডেট সময় : ০৫:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • / ৭৩৯ বার পড়া হয়েছে
Logo
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ফজর৪:৩৮
যোহর১১:৪৬
আসর৪:২৬
মাগরিব৫:৩৮
ইশা৬:৪৯
সূর্যোদয় :৫:৫৩সূর্যাস্ত :৫:৩৮

শহীদ আরমান দিবস, কী ঘটেছিল ৩১ বছর আগের এই দিনে

আপডেট সময় : ০৫:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

আজ শহীদ আরমান দিবস। ঠিক ৩১ বছর আগের এই দিনে (৩০ জুন) কিশোরগঞ্জে নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন স্কুলপড়ুয়া তরুণ আরমান। সেই সময় ঘটনাটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আজও শহীদ আরমানকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে দেশবাসী। এদেশে যতদিন ইসলাম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন শহীদ আরমান তাদের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ৩০ জুন ছিল বৃহস্পতিবার। কুখ্যাত নারীবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী লেখিকা তাসলিমা নাসরিনবিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। তৌহিদি জনতা সেদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেয়। পালিত হয় নজিরবিহীন হরতাল।

সারাদেশের মতো আলেম-উলামা অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জেও সেদিন কড়া হরতাল পালিত হয়। শহরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন তৌহিদি জনতা। তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় বিএনপি। অন্যান্য সরকারের মতো যথারীতি তৌহিদি জনতাকে দমানোর চেষ্টা করে পেটোয়া বাহিনী পুলিশ। দুপুরের পরপর শহরের গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় মিছিলে গুলি করে পুলিশ। সেই গুলিতে আরমান লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। তার তাজা খুনে রঞ্জিত হয় কিশোরগঞ্জের রাজপথ।

শহীদ আরমানের বাসা ছিল শহরের পুরান থানা এলাকায়। শহীদি মসজিদের পাশেই। তিনি শহরের আজিম উদ্দিন সরকারি হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন। তবে তার বেশির ভাগ বন্ধুবান্ধব ছিল জামিয়া ইমদাদিয়ার। তিনি নিয়মিত নামাজ পড়তেন শহীদি মসজিদে। সেই বয়সেই ইসলামী ছাত্র মজলিসের সঙ্গে জড়িয়ে যান। মূলত সেখান থেকেই তার মধ্যে শহীদ হওয়ার তামান্না জাগে।

সেই সময়ে শহীদ আরমানকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন তারা বলেন, আরমান শহীদ হওয়ার আগের দিন জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিম মাওলানা সালাহুদ্দিন সাহেবের কাছে জানতে চান, নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে মারা গেলে কি শহীদ হবে? মাওলানা সালাহুদ্দিন জবাব দেন- হঁ্যা হবে। এই কথাটি কিশোর আরমানের মনে দাগ কাটে। সেদিন তার মা বারবার মান করছিলেন বের হতে। কিন্তু কোনো বারণই তাকে রুখতে পারেনি। তিনি মিছিলে যান এবং পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

জামিয়া ইমদাদিয়ার ফারেগ মাওলানা গাজী আশরাফ আলী সেদিন শহীদ আরমানের পাশেই ছিলেন। তিনিও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেখান থেকেই গাজী উপাধি যুক্ত হয় তার সঙ্গে। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন আমরা মিছিল করে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ গৌরাঙ্গবাজারের দিকে পুলিশের লাঠিচার্জের কথা শুনতে পেলাম। আমি আর আরমান প্রায় সমবয়সী। আরমান বলল, ইসমাঈল হুজুরকে পুলিশ মারধর করছে। চল, দেইখা আসি। আমরা যখন ব্যাপারটা দেখতে জামিয়া ইমদাদিয়া পেরিয়ে জনতা ব্যাংকের সামনে এলাম, ঠিক তখনই গোলাগুলি শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরমান গুলিবিদ্ধ হলো, আমিও পড়ে গেলাম মাটিতে। তারপর আর কিছুই জানি না। সুস্থ হওয়ার পর জানতে পারি আরমান আর নেই। আল্লাহর দয়ায় আমি এখনো বেঁচে আছি।’

পরদিন শহীদ আরমানের লাশ নিয়ে শহরে মিছিল বের হয়। ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল জানাজা। সেই জানায় কিশোরগঞ্জের আলেম-উলামা ছাড়াও ঢাকা থেকে অনেক আলেম-উলামা শরিক হন। জনতার চাপে তৎকালীন বিএনপি সরকার অভিযুক্ত পুলিশকে চাকরিচ্যুত করে। এই হত্যার বিচারের আশ্বাসও দেওয়া হয়। তবে সেই বিচার আর আলোর মুখ দেখেনি। শহীদ মসজিদের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় শহীদ আরমানকে। দীনের জন্য, কুরআনের সম্মান রক্ষায় শহীদদের তালিকায় আজও উজ্জ্বল হয়ে আছেন শহীদ আরমান।

মুআমু/